Power of attorney Bangladesh

+8801929125100

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম ।। Legal Procedure of Divorce

তালাক দেওয়ার বৈধ নিয়ম

তালাক শব্দটাই বিচ্ছেদের, তালাক মানেই ভাঙ্গন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে দুজন মানুষ একসঙ্গে পথচলা শুরু করে। সেই পথচলা সবসময় মসৃণ হয় না। বাস্তবতা কখনো এমন এক অবস্থার তৈরি করে যখন বিচ্ছেদই হয়ে উঠে একমাত্র সমাধান। আমাদের দেশে এখনো এই বিশ্বাস আছে যে, মুখে তিন বার তালাক বললেই তালাক হয়ে যায়। ইসলাম ধর্ম মতে ব্যাপারটা সত্য হলেও আমাদের দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মুখে উচ্চারিত তালাক আইনসম্মত নয়।

বিয়ে করার ক্ষেত্রে যেমন আইনী বৈধতা জরুরী তেমনি তালাকের ক্ষেত্রেও বৈধতা জরুরী। আমাদের দেশের আইনমতে, কেউ যদি ডিভোর্স বা তালাক দিতে চায় তবে মুখে ‘তালাক’ বলার পর এই সংক্রান্ত লিখিত নোটিশও দিতে হবে। যাকে তালাক দেয়া হয় সে স্বামী বা স্ত্রী যাই হোক, তাকে নোটিশ দিয়ে তালাকের বিষয়ে অবগত করতে হবে। পাশাপাশি একই নোটিশ তালাক যাকে দেয়া হয় তার এলাকার চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠাতে হবে।

চেয়ারম্যান বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে—
১।        ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,
২।        পৌরসভার চেয়ারম্যান,
৩।        সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা প্রশাসক,
৪।        সেনানিবাস এলাকায় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারের নিয়োগ করা ব্যক্তি,

চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো তালাক  নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে দুই পক্ষের পুনঃমিলনের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান সালিশি কাউন্সিল তৈরি করবেন। যদি দুই পক্ষের মধ্যে কোনোভাবেই পুনঃমিলন সম্ভব না হয় তবে তালাক নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্ত্রীর ভরণপোষণ ও অন্যান্য খরচ বহন করবেন স্বামী। তালাক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে সথাসময়ে তালাক নিবন্ধন করতে হবে।

তালাকের ক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, যদি তালাক দেওয়ার সময় স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে থাকে তবে তার গর্ভাবস্থার পরিসমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না।

স্ত্রী কর্তৃক তালাকের নিয়ম

দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, মুসলিম আইনে স্ত্রীর তালাক দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই, যদি কাবিননামার ১৮ নং কলামে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া না থাকে। তবে, বর্তমানে সকল কাবিনেই স্ত্রীকে এই বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়। যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা কাবিনে উল্লেখ করা না থাকে তবুও মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন- ১৯৩৯ অনুযায়ী মুসলিম আইনে বিবাহিত কোন মহিলা এক বা একাধিক কারণে আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন। যেমন,

১। চার বছর পর্যন্ত স্বামীর কোন খোঁজখবর পাওয়া না গেলে।

Divorce Rate in Dhaka

২। দুই বছর যাবত স্বামী কর্তৃক অবহেলিত এবং স্বামী ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে।

৩। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১’র বিধান লঙ্ঘন করে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করলে।

৪। স্বামী ৭ বছর বা তার বেশি মেয়াদের জন্য কারাদণ্ড প্রাপ্ত হলে।

৫। স্বামী কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর ধরে বিবাহিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।

৬। বিয়ে করার সময় স্বামী পুরুষত্বহীন হলে এবং এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে।

৭। দুই বছর ধরে স্বামী অপ্রকৃতিস্থ থাকলে বা, কুষ্ঠ রোগ বা, সংক্রামক যৌন ব্যাধিতে ভুগলে।

৮। ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই যদি অভিভাবকের মাধ্যমে বিয়ে দেওয়া হয় এবং ১৯ বছর বয়স হওয়ার আগেই এই বিয়ে প্রত্যাখ্যান করলে।

৯। স্ত্রীর প্রতি স্বামী নিষ্ঠুর আচারণ করলে।

এক্ষেত্রে নিষ্ঠুর আচরণগুলো হল:

ক) স্বভাবগতভাবে তাকে মারপিট বা, শারীরিক নির্যাতন ছাড়াও নিষ্ঠুর আচরণ করে স্ত্রীর জীবন দুর্বিষহ করে তুললে।

খ) খারাপ চরিত্রের মহিলাদের সঙ্গে মেলামেশা করলে বা অনৈতিক জীবনযাপন করলে।

গ) স্ত্রীকে অনৈতিক জীবনযাপানে বাধ্য করার চেষ্টা করলে।

ঘ) স্ত্রীর সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করলে বা, তার স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকারে বাধা প্রদান করলে।

ঙ) স্ত্রীর ধর্মকর্ম পালনে বাধা দিলে।

চ) একাধীক স্ত্রী থাকলে পবিত্র কোরআনেরর বিধান মোতাবেক সমভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হলে।

স্বামী কর্তৃক নিষ্ঠুর আচরণের জন্য কাবিননামায় তালাকের ক্ষমতা না থাকা সত্বেও স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারবেন। অন্য যে কোনও সংগত কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন যে, উল্লেখিত যে কোনও একটি কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে হলে স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে।

তালাক স্বামী বা, স্ত্রী যেই দিক না কেন, স্ত্রী তার প্রাপ্য মোহরানা যে কোনও সময় দাবী করতে পারবেন।

মনে রাখতে হবে যে, তালাক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে সথাসময়ে তালাক নিবন্ধন করাতে হবে। অনেকেই দেনমোহর এর টাকার জন্য মামলা করতে আমাদের কাছে আসেন। কিন্তু তালাক রেজিস্ট্রী সংক্রান্ত কাগজপত্র না থাকার কারনে আমরা কোন সহায়তা করতে পারিনা। একটু অবহেলা ও অজ্ঞতার কারনে অনেকেই নিজের অধিকার হারাচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায় বিচার হতে।

Consult with our Divorce Specialist Lawyer

ADV Al Mahmud Rajib

Phone – 01675881964

Mail – [email protected]

AIN BISHAROD– (A Legist Law Firm)
Facebook
Twitter
LinkedIn

সাম্প্রতিক পোস্ট

ভাড়া চুক্তিপত্র

দোকান / বাণিজ্যিক স্পেস ভাড়া চুক্তিপত্র নমুনা

বাড়ি ভাড়া বা দোকান ভাড়া দেয়া-নেয়ার ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে সু-নির্দিষ্ট চুক্তি থাকা আবশ্যক। উক্ত চুক্তি পত্রে উভয়ৈর দ্বায়িত্ব – কর্তব্য এবং আর্থিক লেনদেনর বিষয় উল্লেখ থাকতে হয়। চুক্তি মেয়াদ শুরু, চুক্তি মেয়াদ শেষ এবং উপ-ভাড়াটিয়া নিয়োগ ও সার্ভিস চার্জ প্রদানের মতো সুক্ষ বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে দু-পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে নিতে হয়। ভাড়া চুক্তির মধ্যে এসব বিষয় উল্লেখ না থাকে ভাড়া দাতা এবং ভাড়াটিয়া দুজনের মধ্যে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ঝামেলার সৃষ্টি হয়। একটি আদর্শ ভাড়া চুক্তির নমুনা এখানে দেয়া হল আমাদের পাঠকদের বুঝার সুবিধার্থে।

Read More »
দেনমোহর আদায়

দেনমোহর আদায় করবেন কিভাবে ?

আমাদের সমাজে দেখা যায় বিয়েতে দেনমোহর নগদ পরিশোধের ব্যাপারটি সরাসরি উপেক্ষা করা হয়। হাতে গোনা কয়েকটা বিয়ে ছাড়া নগদ দেনমোহর আদায় এর উদাহরন খুব কম। অনেকে আবার দেনমোহর দেয়া দূরের কথা বিয়েতে দেয়া বিভিন্ন উপহার কে উসূল দেখিয়ে দেনমোহরের সাথে স্বমন্বয় করে নেয়। বিয়ের পর বক্রী দোনমোহরের অর্থ নিজ তাগিদে কোন স্বামী পরিশোধ করেন না ফলে স্ত্রী তাহার দেনমোহরের পাওনা হতে আজীবন বঞ্চিত থাকেন।

Read More »

নামজারী আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া

কামাল দুই বিঘা জমির মালিক এবং সে নিয়মিত সরকারী খাজনা পরিশোধ করে থাকে। সরকারী অফিসে লেখা আছে যে, কাওলা মৌজার আরএস ৫১০ দাগের ২ বিঘা জমির মালিক কামাল। পরবর্তীতে, কামাল উক্ত জমি রহমত এর নিকট বিক্রী করে। যেহেতু বর্তমানে রহমত মালিক কাজেই কামালের নাম কেটে রহমতের নাম সরকারী কাগজপত্রে লিপিবদ্ধ করাই মূলত নামজারী ।

Read More »

Recent